ক্লাউড কম্পিউটিং কি এবং এর পরিপূর্ণ ধারণা
বন্ধুগণ আজ আমরা ইন্টারনেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয় ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে পরিপূর্ণ ধারণা লাভ করার চেষ্টা করব । কেননা এই বিষয় নিয়ে আমরা জানতে চাইলে ভালো কোনো আর্টিকেল না পাওয়ার ফলে অনেক কিছুই আমাদের অজানা রয়ে যায় । চলুন তাহলে ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে আজ আমরা কিছুটা বিস্তারিত ধারণা লাভ করার চেষ্টা করি ।
ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে আজ আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব ।
- ক্লাউড কম্পিউটিং কি
- ক্লাউড কম্পিউটিং এর কাজ
- ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহরণ
- ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা
- ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহার
- ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস এর প্রকার
বিস্তারিত ঃ
ক্লাউড কম্পিউটিং কি
ক্লাউড কম্পিউটিং হলো এমন এক প্রকার ইন্টারনেট সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক পরিষেবা বা সার্ভিস , যা নেটওয়ার্ক স্টোরেজ স্পেস এবং কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দ্রুত ও সুবিধাজনক ব্যবহার নিশ্চিত করে । অর্থাৎ ক্লাউড কম্পিউটিং মানে বুঝায় ইন্টারনেট ভিত্তিক সার্ভিস , সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার ভাড়া নেয়া , এক কথায় বলতে গেলে আউটসোর্সিং করাকে বুঝায় ।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর কাজ
ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করে আমাদের করা বিভিন্ন কাজগুলোকেই বলা হয় ক্লাউড কম্পিউটিং ।মূলত ক্লাউড কম্পিউটিং এর কাজ বলতে " রিমোট ক্লাউড স্টোরেজ " ব্যবহার করে আমাদের করা বিভিন্ন কাজগুলোকেই বলা যেতে পারে । যেমন ঃ file storage , file backup , web application hosting ইত্যাদি । এছাড়া ইন্টারনেটে থাকা রিমোট সার্ভার গুলোতে বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে পরোক্ষভাবে আমাদের স্টোরেজ প্রদান করাও হতে পারে ক্লাউড কম্পিউটিং এর কাজ ।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহরণ
ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রচুর উদাহরণ রয়েছে । কিন্তু আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে কয়েকটি পরিচিত উদাহরণ তুলে ধরার চেষ্টা করছি । উদাহরণ নিম্নরূপ ঃ
- Youtube হলো ক্লাউড কম্পিউটিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটি উদাহরণ । যেখানে কোটি কোটি ইউজার এর বিডিও ফাইলগুলো হোস্ট করেন ।
- Google Photos একটি online photo hosting service যার মাধ্যমে ক্লাউডে ডিজিটাল ছবিগুলো সেভ করে রাখা যায় ।
- Google docs ও Microsoft office এ cloud service গুলোর মাধ্যমে word documents , presentations , spreadsheet ইত্যাদি ডাটা সার্ভার গুলোতে হোস্ট করে রাখা যায় । এছাড়া ডকুমেন্টগুলো ক্লাউড সার্ভারে থেকেই Edit ও create করতে পারবেন ।
- ফেইসবুকও ক্লাউড কম্পিউটিং এর আওতায় পড়ে । কারণ কোটি কোটি লোকদের আপলোড করা বিডিও , ইমেজ এবং ডাটা গুলোকে নিজস্ব ডাটা সেন্টারে সেভ করে রাখে ।
- এছাড়া Microsoft one drive এবং Google drive এর মতো cloud storage service রয়েছে যেগুলো আমাদের ফাইল ডাটা এবং ডকুমেন্টগুলোকে তাদের সার্ভারে হোস্ট করে রাখে ।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা
ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রচুর সুবিধা রয়েছে , এর মধ্যে কিছু সুবিধা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি । সুবিধাগুলো নিম্নরূপ ঃ
- কম খরচে ক্লাউড সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন ।
- ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডাটা , এপস বা ফাইলগুলো এক্সেস ও ম্যানেজ করতে পারবেন ।
- আপনার ডাটা ও ফাইলগুলো সুরক্ষিত থাকবে ।
- অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে দামি দামি Hardware , utilities বা data center তৈরি করতে হবেনা ।
- প্রয়োজন অনুসারে স্টোরেজ এবং ভার্চুয়াল রিকোয়ারমেন্টস গুলো বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন ।
- এক ক্লাউড ফ্ল্যাটফর্ম থেকে সহজেই অন্য ক্লাউড ফ্ল্যাটফর্ম এ migrate করা সম্ভব ।
- আধুনিক কম্পিউটিং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আপনি যতটুকু রিসার্চ করবেন কেবল ওই সমপরিমাণ টাকাই দিতে হবে ।
- ক্লাউড স্টোরে নিজের ডাটা ও ফাইলগুলো স্টোর করে রাখলে , যেকোনো ডিভাইস দ্বারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজের ফাইলগুলো এক্সেস বা ম্যানেজ করতে পারবেন ।
আর এগুলোই মূলত ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহারের সুবিধা বা লাভ বলা যায় ।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহার
প্রযুক্তি দুনিয়ায় বিভিন্ন আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে এই আধুনিক ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে । এর মধ্যে আমি ক্লাউড কম্পিউটিং এর পাঁচটি সেরা ব্যবহার আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি ।
- ফাইল স্টোরেজ এর ক্ষেত্রে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয় ।
- বিভিন্ন ধরণের অনলাইন এপ্লিকেশন গুলোর ব্যাকআপ নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্লাউড স্টোরেজ এর ব্যবহার করা হয় ।
- ওয়েবসাইট এবং ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরি করার ক্ষেত্রে অধিক পরিমাণে cloud hosting services ব্যবহার করা হয় । যেমনঃ ( Google cloud , Digitalocean ) .
- নিজের Personal files এবং Data গুলো cloud storage এ store করার ক্ষেত্রে Google drive বা Microsoft one drive ব্যবহার করা হয় ।
- Application test এবং development এর ক্ষেত্রে cloud computing ব্যবহার করা হয় ।
ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস এর প্রকার
এখন আমরা ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস এর প্রকার এবং এই বিষয় এর বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব । ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস মূলত তিন প্রকার ।যথাঃ
- IaaS ( Infrastructure-as-a Service )
- PaaS ( Platform-as-a Service )
- SaaS ( Software-as-a Service )
IaaS ( Infrastructure-as-a Service )
এই সার্ভিস টিকে self service model হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ক্লাউড কম্পিউটিং এর সব থেকে বেসিক সার্ভিস হিসেবে IaaS ব্যবহার করা হয় । এখানে কেবল আপনাকে Infrastructure ( জায়গা ) টি দিয়ে দেওয়া হয় এবং সম্পূর্ণ জায়গা কিভাবে ব্যবহার করবেন সেটা নিজেকেই সেটআপ করতে হবে । যেমনঃ Application install , Application management , Application data এগুলো সম্পূর্ন আপনার করতে হবে । তবে data storage , server , virtualization এবং networking কেবল এগুলোই cloud computing provider আপনাকে দিবে । এছাড়া web application development এবং online based application তৈরি করার ক্ষেত্রে এই service ব্যবহার করা হয় ।
PaaS ( Platform-as-a Service )
Software developers দের এটি একটি সেরা ফ্ল্যাটফর্ম । এই সার্ভিস ব্যবহার করে developers রা বিভিন্ন applications গুলোকে develop , চালানো এবং ম্যানেজ করতে পারেন । এই ক্ষেত্রে এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট এর জন্য জরুরি হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার টুলস গুলো একটি থার্ড পার্টি প্রোভাইডার দ্বারা প্রদান করা হয়। যেমনঃ Insfrastructure , operating system , database managment এবং ডেভেলপমেন্ট টুলস গুলো দিয়ে দেওয়া হয় । একজন ডেভেলপার এর জন্য ওয়েভ এপ্লিকেশন তৈরি করার প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়ে দাঁড়ায় এই ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে ।
SaaS ( Software-as-a Service )
SaaS হল এমন একটি ক্লাউড based method যেটির ব্যবহার করা হয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইউজারকে সফটওয়্যার সার্ভিস প্রদান করার উদ্দেশ্যে । এর ফলে একজন ইউজারকে সফটওয়্যার বা এপ্লিকেশন কম্পিউটারে ইন্সটল করে ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না ।একটি SaaS এপ্লিকেশন ওয়েভ ব্রাউজারে লগইন করে সেটা ব্যবহার করতে পারবেন । সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি ক্লাউড এপ্লিকেশন গুলোকে SaaS এ ধরা হয় ।
সুতরাং বন্ধুগণ ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে আমি আপনাদেরকে পরিপূর্ন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি । এ বিষয়ে যদি আপনাদের কোনো মন্তব্য বা ভালো পরামর্শ থেকে তাকে, থাহলে নিশ্চয়ই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না । আমি যথাসাধ্য কমেন্টের সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব ।
ধন্যবাদ সবাইকে ।
No comments