অনলাইনে আয় করার জন্য যতগুলো পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে ইউটিউবে বিডিও আপলোড করে আয় করা । সহজ এই কারণেই আমি বলছি কেননা অন্যান্য সাইটের তুলনায় এই সাইটে আপনি যদি ভালো ভালো বিডিও তৈরী করে আপলোড করতে পারেন তাহলে খুব দ্রুতই আয় করার মত সক্ষমতা তৈরী করতে পারবেন । এছাড়াও ইউটিউবে মনিটাইজেশন প্রক্রিয়া খুব দ্রুতই লাভ করা যায় এবং মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য নিয়মকানুনও স্থিতিশীল বলে আমি মনে করি । আজ আমরা ইউটিউব থেকে কিভাবে আয় করা যায় এবং মনিটাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কি কি করতে হবে এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা লাভ করার চেষ্টা করব ।

যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব । তা হলো নিম্নরূপঃ

কিভাবে ইঊটিঊব চ্যানেল খুলব ।
ইউটিউব চ্যানেলে কিরকম বিডিও আপলোড করব ।
কিভাবে ইউটিউব মনিটাইজেশন চালু করব ।
কি পরিমাণ টাকা ইউটিউব থেকে আয় করা যাবে ।

আরো পড়ুন : ফ্রিলান্সিং করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস ।

বিস্তারিতঃ

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলব

ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ইউটিউব একাউন্ট খুলতে হবে । ইউটিউব একাঊন্ট খোলার জন্য প্রথমে নিজের ইউটিউব একাউন্টে গিয়ে জিমেইল আইডি দ্বারা লগইন করতে হবে । ইউটিউবে লগইন করার পর আপনি ঠিক উপরে ডানদিকে একটি আইকন এর লগো দেখতে পারবেন । আইটিতে ক্লিক করুন ,ক্লিক করার পর ' creator studio ' বলে একটি অপশন দেখতে পাবেন , সেটিতে ক্লিক করুন ।এরপর আপনি ইউটিউব চ্যানেলের ড্যাশবোর্ড দেখতে পারবেন । সেখানে আপনি আপনার চ্যানেলের নাম এবং বিস্তারিত তথ্য দিয়ে চ্যানেলটি খুলে নিতে পারবেন ।

চ্যানেলটিকে খোলার পর আপনার প্রথম যে কাজটি হচ্ছে , সেটি হল আপনার চ্যানেল্টিকে ভেরিফাই করা । চ্যানেল ভেরিফাই করার জন্য আপনি চ্যানেল ড্যাশবোর্ড এ গিয়ে বামদিকে থাকা অপশন গুলো থেকে চ্যানেল এ ক্লিক করুন । এরপর আপনি একটি ভেরিফাই লিংক দেখতে পাবেন ,সেখানে ক্লিক করে আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে চ্যানেল্ টিকে ভেরিফাই করে ফেলুন । এখন থেকে আপনি ইউটিউবে বিডিও আপলোড করে বিডিও এর মধ্যে বিঙ্গাপন দেখিয়ে আয় করতে পারবেন ।

ইউটিউব চ্যানেলে কিরকম বিডিও আপলোড করব

আমরা অনেকেই ইউটিউব চ্যানেল বানানোর পর কি নিয়ে বিডিও আপলোড করব এ বিষয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি । তাছাড়াও একটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল বানানোর জন্য চ্যানেলের টপিক নির্ধারণ করা খুবই জরুরি । আজ আমরা এরকই কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব ।যে যে টপিক নিয়ে আমরা আলোচনা করব তা হলো নিম্নরূপঃ

টিউটরিয়াল বিডিও বিষয়ক চ্যানেল ।
টেকনোলজি বিষয়ক চ্যানেল ।
Apps Review বিষয়ক চ্যানেল ।
মোবাইল ফোন রিভিঊ চ্যানেল ।
খাবার বানানোর বিডিও বিষয়ক চ্যানেল ।

টিউটরিয়াল বিডিও বিষয়ক চ্যানেল

টিউটরিয়াল বিডিও বানিয়ে আয় করাটা হচ্ছে মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম । টিঊটরিউয়াল বিডিও বানিয়ে অনেকেই সফল হয়েছে এবং ভালো টাকা ইনকাম করেছেন । টিউটরিয়াল বিডিও আপনার ইচ্ছে অনু্যায়ী তৈরী করতে পারেন ।অর্থাৎ আপনি যে বিষয়ে অভিঙ্গ সে বিষয়ে বিডিও তৈরি করে আয় করতে পারেন । আপনি বিভিন্ন ধরনের বিডিও তৈরী করতে পারেন , যেমন - কমেডি বিডিও , শিক্ষা মূলক বিডিও , সচেতনতা মূলক বিডিও ইত্যাদি । অর্থাৎ মানুষের কাছে যে বিষয়গুলো গ্রহণযোগ্য সেগুলো মাথায় রেখেই বিডিও তৈরী করার চেষ্টা করবেন ।

টেকনোলজি বিষয়ক চ্যানেল

বর্তমানে অনলাইনের প্রত্যেকটা মাধ্যমেই ইউটিউবের বিডিও বলি আর ব্লগের কনটেন্ট বলি , প্রতিটা জায়গায় টেকনোলজি বিষয়টি সমান ভাবে গুরুত্ব পেয়েছে । কেননা বর্তমানে টেকনোলজি বিষয়ে জানার আগ্রহ সবারই বৃদ্ধি পেয়েছে । তাই আপনার যদি টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে আপনি এই বিষয়ে বিডিও তৈরি করে ইনকাম করতে পারেন ।

Apps Review বিষয়ক চ্যানেল

এন্ড্রয়েড এপস ব্যবহার করতে পছন্দ করে না , এমন লোক খুজে পাওয়া খুবই দুষ্কর । তাই আপনি চাইলে গুগল প্লেস্টোরে নতুন যে এপস গুলো আপডেট হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বিডিও বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করে আয় করতে পারেন । এজন্য আপনি প্রথমে ঐ এপস টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করবেন ।

মোবাইল ফোন রিভিউ চ্যানেল

আপনি চাইলে মোবাইল ফোন রিভিউ করে আয় করতে পারেন । এ জন্য আপনাকে মার্কেটে কোন মোবাইল নতুন আসছে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং মোবাইলটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরতে হবে । আপনি যত বেশি মোবাইল সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দিতে পারবেন , আপনার বিডিও টি ততবেশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে । সুতরাং মোবাইল ফোন রিভিউ নিয়ে বিডিও তৈরি করতে চাইলে সেই বিষয়ে প্রথমে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন ।

আরো পড়ুন : ডোমেইন হোস্টিং কি এবং কিভাবে কিনতে হয় ।

খাবার বানানোর বিডিও বিষয়ক চ্যানেল

আপনি যদি নিত্য নতুন খাবার বানাতে পছন্দ করেন বা নতুন খাবার তৈরি করতে পারেন । তাহলে আপনার বানানো সেই রেসিপির বানানোর প্রক্রিয়া উল্লেখ করে , বিডিও তৈরি করে ,ইউটিউবে আপলোড করে ইউটিউব থেকে আয় করতে পারেন । আপনি যদি মজাদার খাবার বানাতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই লোকজন আপনার ইউটিউব চ্যানেল ফলো করবে এবং এ থেকে আয় করতে পারবেন ।

কিভাবে ইউটিউব মনিটাইজেশন চালু করব

মনিটাইজেশন চালু করার জন্য আপনাকে নিজের ইউটিউব একাউন্ট থেকে পর পর - channel icon , creator studio , channel ক্লিক করে তারপর মনিটাইজেশন এ যান । এরপর যে চারটি অপশন রয়েছে সেগুলো পূরণ করুন । দ্বিতীয় অপশন টিতে গুগল এডসেন্সের জন্য একাউন্ট বানাতে হবে । তাই সঠিকভাবে এডসেন্স একাউন্ট তৈরী করে , তা আপনার ইউটিউব একাউন্টের সাথে যুক্ত করে ফেলুন ।কিছুদিনের মধ্যেই আপনার একাউন্ট মনিটাইজেশনের যোগ্য হলে আপনাকে জানানো হবে । আপনার আবেদন টি সম্পন্ন হলে আপনার বিডিওতে এড যুক্ত হবে এবং এ থেকে আয় করা টাকা আপনার এডসেন্স একাউন্টে জমা হতে থাকবে । আপনার এডসেন্স একাউন্টে যখন ১০০ ডলার হবে তখন আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা নিতে পারবেন ।

কি পরিমাণ টাকা ইউটিউব থেকে আয় করা যাবে

ইউটিউব থেকে কি পরিমাণ টাকা আয় করা যায় , সেটা নির্ভর করবে আপনার বিডিওর কোয়ালিটির উপর ।অর্থাৎ আপনার আপলোড করা বিডিওটি কি পরিমাণ ভিউ হল এর উপর । অনেক ইউটিউবার আছেন যারা প্রতি ১০০০ ভিউ এ ২-৩ ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকেন । তাহলে মনে করুন আপনার একদিনে যদি ৫০০০ ভিউ হয় তাহলে আপনি দৈনিক ১০-১৫ ডলার পর্যন্ত আয় করে নিতে পারেন । এখন আপনি নিজেই কল্পনা করতে পারেন যে আপনি কি পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন ।

ব্লগ থেকে আয় করার উপায় জানতে এখানে ক্লিক করুন ।

পরিশেষে আমি বলব যে অন্যের কথায় কান না দিয়ে বা প্রলোভিত না হয়ে আপনি নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করুন যে আপনি ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন কিনা । আর নিশ্চয়ই ইউটিউব থেকে আয় করা সম্পর্কে যদি আপনার কোনো মন্তব্য বা পরামর্শ থাকে , তাহলে নিশ্চয়ই তা কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না । আমি নিশ্চয়ই চেষ্টা করব আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে বা সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করার ।

ধন্যবাদ সবাইকে ।